TRAVEL STORY নগাঁও শহর অসমের এমন একটি লুকনো অঞ্চল, যেখানে ঘুরতে গেলে প্রেমে পড়তেই হবে আপনাকে

Spread the love


ভারতের অসম হল এমন একটি রাজ্য, যা উত্তর পূর্ব ভারতের প্রবেশ দ্বার হিসেবে বিবেচিত হয়। এই রাজ্যের সৌন্দর্য ইদানীং কালে এতটাই জনপ্রিয় হয়েছে যে, প্রত্যেক দিন হাজার হাজার দেশি ও বিদেশি পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন। আপনিও যদি অসম ভ্রমণের পরিকল্পনাও করে থাকেন, তা হলে এই সময় অবশ্যই এই রাজ্যের লুকনো সৌন্দর্য নগাঁও দেখে আসতে হবে। এই প্রতিবেদনে অসমের নগাঁও শহরের কথাই আলোচনা করা হচ্ছে। নগাঁও আদতে এমন একটি স্থান, যা অসমের প্রাকৃতিক ভাণ্ডার হিসাবে বিবেচিত হয়। তা হলে দেখে নেওয়া যাক কোথায় যাবেন, কী ভাবে যাবেন আর কোথায় কোথায়ই বা ঘুরবেন আপনি। (All photo credit :pexels.com)

অসমের নানা দর্শনীয় স্থান কী কী ?

অসমের দর্শনীয় স্থানগুলির কথা বলতে গিয়ে অনেকেই মূলত কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যান, মাজুলি দ্বীপ, জোরহাট, ডিব্রুগড় বা তেজপুরের মতো জায়গাগুলির কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু এগুলির পাশাপাশিই তবে এই রাজ্যে এমন একটি সুন্দর এবং আশ্চর্যজনক জায়গা রয়েছে যা সবার চোখ থেকে অনুপস্থিত। সেই জায়গারই নাম হল নগাঁও।

লাওখোয়া বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য –

লাওখোয়া বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য -

এখানে উপস্থিত লাওখোয়া বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য সহ নগাঁও শহরের সৌন্দর্য উল্লেখ না করা সমীচীন হবে না। অসমের কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানের নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন? তার উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তবে নিশ্চিন্তে এ কথা বলা জরুরি যে, লাওখোয়া অভয়ারণ্য তার থেকে কোনও অংশে বিন্দু মাত্র কম নয়। কাজিরাঙ্গা যে ভাবে তার সবুজ বন, বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী এবং বিস্ময়কর দৃশ্যের জন্য সারা বিশ্বে বিখ্যাত, ঠিক সে ভাবেই বিখ্যাত লাওখোয়া অভয়ারণ্য। ব্রহ্মপুত্র নদের দক্ষিণ তীরে ছড়িয়ে থাকা এই অভয়ারণ্যটি এক হাজারেরও বেশি প্রাণী প্রজাতির জন্য বিখ্যাত। বিশেষ করে এটি ভারতীয় গণ্ডারের জন্য বিখ্যাত। আপনি এখানে জঙ্গল সাফারিও উপভোগ করতে পারেন।

শিলঘাট –

শিলঘাট -

নগাঁও অন্য কোনও সাধারণ নদীর তীরে নয়, বরং বিশ্ব বিখ্যাত নদী অর্থাৎ ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত। নগাঁও শহরের প্রান্তে অবস্থিত শিলঘাট একটি খুব সুন্দর এবং আশ্চর্যজনক জায়গা। শিলঘাটে একটা চলতি কথা খুব বিখ্যাত যে, সকালের সূর্যের রশ্মি নদের জলে পড়লে আশেপাশের এলাকা নাকি সেই আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে। একই ভাবে সন্ধ্যায় সূর্যের রশ্মি জলে পড়লে আশেপাশের এলাকায় মনোরম আলো হয়, তার পর ঝুপ করে নেমে আসে আঁধার। এটা শুধু চলতি কথা নয়। আক্ষরিক অর্থেই এখানকার সৌন্দর্য এমন অনন্য। শিলঘাটও অসমের একটি প্রধান বন্দর এবং এখানে একটি প্রাচীন মন্দিরও প্রতিষ্ঠিত রয়েছে।

চম্পাবতী কুণ্ড বা জলপ্রপাত –

চম্পাবতী কুণ্ড বা জলপ্রপাত -

যে সব পর্যটকই প্রথম বারের জন্য অসমের চম্পাবতী কুণ্ড বা জলপ্রপাত দেখতে যান, তাঁরাই এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে পড়েন। চাপনাল্লা এলাকায় অবস্থিত চম্পাবতী জলপ্রপাত একটি জনপ্রিয় গন্তব্যের পাশাপাশি একটি প্রাকৃতিক সম্পদের ভাণ্ডারও বটে। চম্পাবতী জলপ্রপাত সম্পর্কে বলা হয় যে, উচ্চতা থেকে জল পড়লে আশেপাশের জায়গাগুলি মুখরিত হয় সেই জলপ্রপাতের শব্দে। এই স্থানের আশেপাশের এলাকাকে পাখির আবাসস্থল হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।

মহামৃত্যুঞ্জয় মন্দির –

মহামৃত্যুঞ্জয় মন্দির -

নগাঁও শহরের পরিচয় সম্পূর্ণ ভাবে দেওয়া যাবে না, যদি এখানকার সবচেয়ে বিখ্যাত মহামৃত্যুঞ্জয় মন্দিরের কথা বলা না হয়। এই মন্দিরটি এতটাই বিখ্যাত যে, অসমে বেড়াতে আসা প্রত্যেক পর্যটক এখানে আসতে ভোলেন না। মহামৃত্যুঞ্জয় মন্দির সম্পর্কে বলা হয় যে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু শিব মন্দির এবং এখানে প্রায় ১২৬ ফুট উঁচু একটি শিবলিঙ্গ রয়েছে। পাহাড়ের উপরে থাকার কারণে এই মন্দিরটি প্রায় সকল পর্যটকেরই পছন্দের তালিকার প্রথম দিকে থাকে।

তা হলে আর চিন্তা কীসের? এ বার অসম বেড়াতে গেলে অবশ্যই নগাঁওকে রাখুন নিজের বেড়াতে যাওয়ার তালিকায়।



Source link