সাংতি উপত্যকা। অরুণাচল প্রদেশের পশ্চিম কামেং জেলায় অবস্থিত একটি সুন্দর এবং অফবিট পর্যটনস্থল। দিরাং শহর থেকে সাংতি উপত্যকার দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। উপত্যকা থেকে বিখ্যাত সেলা পাস এর দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। প্রকৃতিপ্রেমী এবং বন্যপ্রাণী উৎসাহীদের এই উপত্যকাটি দারুণ লাগবে। ভালো লাগবে অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদেরও।
জানেন কি সাংতি উপত্যকার বিরল প্রজাতির কালো গলার সারস পাখি বা ব্ল্যাক-নেকড্ ক্রেনের দেখা পাবেন। কিন্তু ঠিক কোন জায়গায় গেলে এই পাখির দেখা পাবেন জানেন? (All photo credit: pexels.com)
কালো গলার সারস
জানেন কি সাংতি উপত্যকার বিরল প্রজাতির কালো গলার সারস পাখি বা ব্ল্যাক-নেকড্ ক্রেনের দেখা পাবেন। কিন্তু ঠিক কোন জায়গায় গেলে এই পাখির দেখা পাবেন জানেন?
ব্ল্যাক নেকড্ ক্রেন অবশ্য মূলত দেখা যায় শীতকালে। সেই সময় এই স্থানে তারা বাসা বাঁধে। আর এদের টানেই প্রতিবছর দেশি বিদেশি পর্যটকরা এখানে হাজির হন। বসন্তের শেষেও অবশ্য সারসদের দেখা পেতে পারেন। না হলে সারসের ঝাঁকের বদলে পাহাড়ের ঠালে পিলপিল করে হেঁটে যাওয়া ভেড়ার পাল দেখতেও ভালো লাগবে। কাশ্মীর উপত্যকায় যেমন টিউলিপ বাগান দেখা যায় তেমনই সাংতি উপত্যকায় দেখতে পাবেন কিউয়ির বাগান।
বেড়ানোর জায়গা

সাংতি উপত্যকার পাহাড়ি নদীই এখানকার মূল আকর্ষণ। নদর ধারেই সারাটা ছুটি কাটিয়ে দেওয়া যায়। নদীর সঙ্গে রয়েছে গ্রাম। আর সেই গ্রামে বাস করেন মহাযান বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মংপা উপজাতির দল। গ্রামের বাড়িগুলি তৈরি হয়েছে কাঠ এবং পাথর দিয়ে। সেখানে প্রধানত ভুট্টার চাষ হয়। তাই গ্রামজুড়ে দেখতে পাবেন প্রচুর ভুট্টা। ভুট্টার রুটি, ভুট্টা থেকে তৈরি মদ, ভুট্টার দানা খাওয়ার চল রয়েছে এখানে। গ্রামে দোকান পাটও আছে। আর এ সবই দক্ষ হাতে সামলাচ্ছেন গ্রামের মহিলারা। গ্রামে রয়েছে একটি বৌদ্ধ গুম্ফা।
সাংতিতে ক্যাম্পিং

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে উপত্যকায় ক্যাম্পিং করা যায়। নদীর ধারে বা বনের গভীরে বেশ কয়েকটি ক্যাম্পসাইট রয়েছে। সেখানে তাঁবু, স্লিপিং ব্যাগ এবং অন্যান্য ক্যাম্পিং সরঞ্জাম ভাড়া পাওয়া যায়। একা যেতে না চাইলে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ট্যুর অপারেটরদের সাহায্য নিতে পারেন।
এছাড়াও উপত্যকায় পাবেন নানা বাজেটের হোমস্টে এবং হোটেল।
সাংতি উপত্যকার কাছাকাছি গন্তব্যস্থল

দিরাং : সাংতি উপত্যকা থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে দিরাং। এখানে রযেছে গরম জলের ঝরণা, প্রাচীন বৌদ্ধ মঠ এবং অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
তাওয়াং: অরুণাচল প্রদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হল তাওয়াং। সাংতি উপত্যকা থেকে এটি প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
বোমডিলা : সাংতি উপত্যকা থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বোমডিলা। ১৭ শতকের বোমডিলা মঠের জন্য এই স্থান পরিচিত।
ভালুকপং : সাংতি উপত্যকা থেকে ভালুকপং-এর দূরত্ব প্রায় ৭৫ কিলোমিটার। জায়গাটি বন্যপ্রাণীতে সমৃদ্ধ। এখানকার অন্যতম দর্শনীয় স্থান হল পাখুই বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য।
সেলা পাস : সেলা পাস উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলের একটি গিরিপথ। সাংতি উপত্যা থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের কাছে এই স্থান অত্যন্ত জনপ্রিয়।