১৭৪৪ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত এশিয়ার প্রাচীনতম এই অ্যাম্ফিথিয়েটারটি রয়েছে অসম রাজ্যে

Spread the love


প্রাচীন সভ্যতার অন্যতম বড় নিদর্শন ভারতবর্ষ। বর্তমান ভারতের থেকেও তার আয়তন ছিল অনেক বড়। প্রাচীন ধর্ম, সভ্যতা, আধ্যাত্মিকতার এক অনবদ্য মিলনভূমি এই দেশ। বিশ্বের বহু দেশ যখন অরণ্য সভ্যতায় জীবনযাপন করতে মশগুল সেই সময় এই ভারতে গড়ে উঠেছিল উন্নত নাগরিক সভ্যতা। ইতিহাসবিদদের দাবি খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ শতাব্দীর আগেই আমাদের দেশে আধুনিক শহর গড়ে উঠেছিল। সেই শহরের কিছু আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত কিছু আজও বহাল তবিয়তে দাড়িয়ে রয়েছে। আধুনিক মানুষ বাস করেন সেই প্রাচীন শহরে। মানব সভ্যতার বিবর্তনের সাক্ষী এরকম ছয়টি শহর আজও রয়েছে আমাদের দেশে। নিজস্ব প্রাচীন ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, স্থাপত্য এই শহরগুলিতে আজও বর্তমান। শিক্ষা, সংস্কৃতি, দর্শন, বিজ্ঞানের প্রাণকেন্দ্র ছিল এই শহরগুলিই। ধারে, ভারে, ঐতিহ্যে নিজেদের প্রাচীনত্ব এখনও খোয়ায়নি তারা। সেই তালিকায় স্বমহিমায় বিরাজ করছে রং ঘর। এশিয়ার প্রাচীনতম অ্যাম্ফিথিয়াটার। ১৭৪৪ সালে অসম শিবসাগর এলাকায় এই অ্যাম্ফিথিয়াটার নির্মাণ করেছিল অহম রাজবংশের শাসকরা। (photo credit: wikipedia)

রং ঘরের ইতিহাস

অসমীয়া ভাষায় ‘রং ঘর’ কথার অর্থ ‘বিনোদনের ঘর’। অসমের শিবসাগরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক দোতালা মহল। অহম শাসনকালে রঙালি বিহুর সময় মহিষের যুদ্ধ ও অন্যান্য উৎসবের আনন্দ উপভোগ করার জন্য রংঘর ব্যবহার করা হত। রংঘর এশিয়ার প্রথম অ্যাম্ফিথিয়েটার হিসেবে খ্যাত। স্বর্গদেউ প্রমত্ত সিংহের রাজত্বকালে ১৭৪৪ সালে এই মহল নির্মিত হয় অহম সাম্রাজ্যের অন্যতম রাজধানী রংপুরের রুপহি পথারে। (photo credit: wikimedia commons)

রং ঘরের স্থাপত্য

রং ঘরের স্থাপত্য

অসমের শিবসাগর শহরের কেন্দ্র থেকে রং ঘরের দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। এটি অসমম ট্রাঙ্ক রোডের পাশে, রংপুর প্রাসাদের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। রংঘর এশিয়ার প্রাচীনতম টিকে থাকা অ্যাম্ফিথিয়েটারগুলির মধ্যে একটি। ভবনটি প্রথম বাঁশ এবং কাঠ দিয়ে নির্মিত হয়েছিল। পরে ১৭৪৪-১৭৫১ খ্রিস্টাব্দে স্বর্গদেও প্রমত্ত সিংহ দ্বারা ইট দিয়ে পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল। রং ঘরের আকৃতি চতুর্ভুজের ন্যায়। চুড়ায় নির্মিত মগরমুখী নৌকার আকৃতি রং ঘড়ের সৌন্দর্যকে বিশেষ মাত্রা প্রদান করেছে। পোড়া ইট দ্বারা নির্মিত এই মহলে কোন ধরনের ধাতুর ব্যবহার করা হয়নি। ইট জোড়া লাগানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল মাসকলাই ডাল, হাঁসের ডিম এবং বড়া চাউল ইত্যাদি। (photo credit: wikimedia commons)

এশিয়ার প্রাচীনতম অ্যাম্ফিথিয়েটার

এশিয়ার প্রাচীনতম অ্যাম্ফিথিয়েটার

অহম শাসনকালে এখানে ষাঁড়ের লড়াই, মোরগের লড়াই, হাতির লড়াই, কুস্তি ইত্যাদির মতো খেলা অনুষ্ঠিত হত। রং ঘর সংলগ্ন মাঠটি রূপোহি পোথার নামে পরিচিত। শুধু রাজ্যেই নয় প্রতিবেশী রাজ্যের রাজকীয় এবং অভিজাত খেলাধুলোও এখানে অনুষ্ঠিত হত। (photo credit: wikimedia commons)

বর্তমান অবস্থা

বর্তমান অবস্থা

ঘন ঘন ভূমিকম্পের কারণে এই প্রাচীনতম অ্যাম্ফিথিয়াটারটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটিকে ইতিমধ্যেই বিপজ্জনক বলে বলে সতর্কতা জারি করেছে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কর্পোরেশন। ঐতিহাসিক রংঘরের দেওয়ালের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৩৫টি ফাটল লক্ষ্য করা গেছে। (photo credit: wikimedia commons)



Source link