রাঙা মাটির শান্তিনিকেতনে আবির রঙে রাঙিয়ে দিন প্রিয় মানুষটিকে

Spread the love


নব বসন্তের দানের ডালি দুয়ারে এসে হাজির। হাতে গোনা কটা দিন পরেই আকাশ বাতাস রেঙে উঠতে চলেছে নানা রঙের আবিরে। রঙের খেলায় মেতে উঠবে আট থেকে আশি। পাড়ার মাঠ, অ্যাপার্টমেন্টের চাতাল, বাড়ির ছাদে চলবে দেদার রং খেলা। দোলযাত্রা উপলক্ষে দিকে দিকে চলবে নাচ-গান-আড্ডা। তা বাড়ির চারপাশে তো প্রতি বছরই রং খেলে কাটান। এবার দোলে শান্তিনিকেতন থেকে ঘুরে আসলে কিন্তু দারুণ হয়।
গোটা দেশের কাছে যা হোলি, আমাদের বাংলায় তা দোলযাত্রা। আর শান্তিনিকেতনে সেটিই হল বসন্তোৎসব। বোলপুর শান্তিনিকেতনে উৎসব চালু করেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই ঐতিহ্য কিছুদিন আগে পর্যন্তও নিয়ম মেনে পালন করা হত। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বসন্তোৎসবের দিন শান্তিনিকেতনকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতেন। সঙ্গ দিতেন স্থানীয়রাও। সারাদিন ধরে চলত নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আবির খেলা, গল্প-আড্ডা আরও কত কী। যদিও নানা কারণে গত কয়েক বছর আগের মতো বিশ্বভারতী চত্বরে আর বসন্তোৎসব পালন করা হচ্ছে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে রং খেলা না হলেও সংলগ্ন এলাকা সহ শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন জায়গায় আবির খেলা হয়। কোপাই নদীর ধার, সোনাঝুরির জঙ্গলেও রঙের খেলায় মেলে ওঠেন পর্যটকরা। যদিও এই সময় শান্তিনিকেতনের হোটেলের ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে যায়। জিনিসপত্রের দামও বেশ বেড়ে যায়। তবে দুটো দিন একটু বেশি খরচ হলেই বা ক্ষতি কী, আনন্দের যে কোনও মূল্য হয় না। (All photo credit: pexels.com)

রাস্তাঘাট

এবারের দোল শান্তিনিকেতনে কাটাতে চাইলে সড়ক পথের আশ্রয় নিন। ট্রেনে টিকিট নাও পেতে পারেন। পেলেও বেশ ভিড় হবে। সড়ক পথে শান্তিনিকেতন যেতে খুব বেশি হলে ঘণ্টা চারেক সময় লাগে। শহরের ভিড়ভাট্টা পেরিয়ে রাঙা মাটির পথে চলতে ভালোই লাগবে।

দোলের বাসা

দোলের বাসা

বসন্ত উৎসব শান্তিনিকেতনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। দোলের কটা দিন এখানে হোটেল বা হোমস্টের ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে পড়ে। আগে থেকে বুক করেও কোনও লাভ হয় না। তাই সেখানে পরিচিত কারও বাড়ির হদিশ থাকলে সেখানেই সময় কাটাতে পারে। না হলে সোনাঝুরির জঙ্গলে সকলে মিলে হই হই করে দিনটা কাটান। কোপাই নদীর ধারেও দারুণ সময় কাটতে পারে।

দোলের আনন্দ

দোলের আনন্দ

প্রথা ভেঙে শান্তিনিকেতনে অবশ্য রং খেলা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। এইবেলা চলে গেলেও আনন্দ করতে পারবেন। এছাড়াও ভুবনডাঙা, সোনাঝুরি, কোপাই নদীর ধারে নিয়ম করে রং খেলা হয়। চলে নাচ গান আর আনন্দ। সেজেগুজে তৈরি হয়ে পড়েন বাউলরাও। আদিবাসী নারী পুরুষের দল নাচে গানে মাতিয়ে রাখেন শান্তিনিকেতনের আকাশ বাতাস। স্থানীয়রা অনেকেই হলুদ পোশাক পড়ে আবির নিয়ে রং খেলেন। তখন অপরিচিতরাও যেন সাময়িকভাবে পরিচিত হয়ে পড়েন।

দোলের সময় সাবধান

দোলের সময় সাবধান

২০১৯ শেষবার রবি ঠাকুরের চালু করা প্রথা মেনে বসন্তোৎসব পালিত হয়েছিল। কিন্তু অতিরিক্ত পর্যটকের কারণে বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী বেশ কিছু ভবন এবং ভাস্কর্য নষ্ট হয়ে যায়। এরপরেই উৎসব বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ৷ এরপর থেকে সচেতন হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রাও। কোনোরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দিতে তাঁরা যেমন প্রস্তুত, তেমনই প্রস্তু পুলিশ প্রশাসন। তাই বেড়াতে গিয়ে রং খেলার আনন্দে মেতে উঠুন। পরিবেশ নষ্ট করবেন না।



Source link