মেঘালয়ের ডাউকি নদীকে বিশ্বের সবচেয়ে স্বচ্ছ নদী কেন বলে জানেন?

Spread the love


Authored by Sapna Singh | Eisamay | Updated: 10 Jan 2023, 10:30 am

রাজ্যের নাম মেঘালয়। আর স্বপ্নের ছোট্টো শহরটির নাম ডাউকি। রাজ্যে আর রাজ্যের নগর যেন রূপকথার মায়ারাজ্য। ডাউকিতে গেলে প্রথম দর্শনে এমন মনে হতেই পারে। কারণ রাস্তার ধারে প্লাস্টিক, কাগজ, আবর্জনা কিছুই নেই সেখানে। আবর্জনাপূর্ণ নদী জলাশয় দেখে দেখে যাঁরা অভ্যস্ত তাঁরা ডাউকি নদীতে নৌবিহার করলে চমকে উঠতে পারেন।

 

এই দেশে মেঘেরা যেন রাস্তা দিয়ে হেঁটে বেড়ায়। মেঘ বালিকারা খিলখিলিয়ে ছুটে চলে যায় মাঠ-ঘাট দিয়ে। মেঘের ভেলায় চড়ে সবাই ভেসে বেড়ায় বাতাসে। আর সেদেশের জল এতই স্বচ্ছ যে জলের নীচে যে প্রাণীগুলি সংসার পেতে বসে আছে তাদের রোজনামচা দেখা যায় খালি চোখে।
রাজ্যের নাম মেঘালয়। আর স্বপ্নের ছোট্টো শহরটির নাম ডাউকি। রাজ্যে আর রাজ্যের নগর যেন রূপকথার মায়ারাজ্য। ডাউকিতে গেলে প্রথম দর্শনে এমন মনে হতেই পারে। কারণ রাস্তার ধারে প্লাস্টিক, কাগজ, আবর্জনা কিছুই নেই সেখানে। আবর্জনাপূর্ণ নদী জলাশয় দেখে দেখে যাঁরা অভ্যস্ত তাঁরা ডাউকি নদীতে নৌবিহার করলে চমকে উঠতে পারেন। সেখানকার ছবি ক্যামেরাবন্দি করলেও চমকে উঠতে পারেন আপনি। এডিটিং ছাড়াও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এমন ছবি উঠবে যে ভাবতেই পারবেন না। মনে হবে প্রকৃতি যেন এখানে সব সময়ই ফোটোজেনিক। (Photo credit: pexels.com)

​ডাউকি ভ্রমণ

সত্যি বলতে কি ডাউকি ভ্রমণের কোনও গাইডলাইন এঁকে দেওয়া যায় না। এই ভ্রমণের প্রধান আকর্ষণ উমঙ্গট নদীর নির্মলতা। নদীতে নৌবিহার করতে করতে মনে হবে যেন শূন্যে ভাসছেন। এতই স্বচ্ছ তার জল। পাহাড়র ঘেরা নদী এবং শহরের বর্ণনা দেওয়ার বোধহয় নতুন করে প্রয়োজন হয় না। কিন্তু নদীর সৌন্দর্য্যের কোনও তুলনাই হয় না। এই নদীতে নৌবিহার করেই সারাটা দিন কাটিয়ে নেওয়া যেতে পারে। উমঙ্গট নদীর আরেক নাম ডাউকি নদী। ডাউকি নদী খাসী এবং জয়ন্তিয়া অঞ্চল দিয়ে বয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। স্বচ্ছ কাঁচের মতো ডাউকি নদীর জলই দেখলে নদী ছেড়ে কোথাও যেতে ইচ্ছে করবে না। নদীতে নৌবিহার করতে করতে কীভাবে যে দিন কেটে যাবে বুঝতেই পারবেন না। (photo credit: wikimedia commons)

উমঙ্গট নদী ছাড়াও অবশ্য ডাউকিতে বেড়ানোর বেশ কয়েকটি জায়গা রয়েছে।

জাফলং জিরো পয়েন্ট
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত জাফলং জিরো পয়েন্ট। এখানেই স্বচ্ছ পরিচ্ছন্ন উমঙ্গট নদী ভারতের সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ডাউকি বাজার থেকে জাফলং জিরো পয়েন্ট দূরত্ব মাত্র এক কিলোমিটার। এখানকার রাস্তা ঘাটে ভারতীয় সেনারা সবসময় পাহারা দেন। যদিও তাতে বেড়ানোর কোনও সমস্যা হয় না। (photo credit: pexels.com)

​বড়হিল ঝরনা

ডাউকি থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বড়হিল ঝরনা। জঙ্গলভর্তি পাহাড়, পরিষ্কার স্বচ্ছ জলের ঝরনা এখানকার সৌন্দর্যকে আরও সুন্দর করে তুলেছে। ভারত থেকে বড়হিল ঝরনা দেখতে হলে একটি সেতু পেরিয়ে বাংলাদেশ যেতে হয়। সেতুর উপর থেকে ঝরনাটি দেখতে দারুণ লাগে। (photo credit: wikimedia commons)

​মাওলিননং

মেঘালয়ের পূর্ব খাসী পাহাড় জেলায় অবস্থিত ছোট্টো গ্রাম মাওলিননং। এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম হিসেবে ঘোষিত হয়েছে এই গ্রাম। শিলং থেকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত মাওলিং গ্রামে আজও মাতৃতান্ত্রিক সমাজ বিরাজমান। গ্রামে নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর বাঁশের তৈরি ডাস্টবিনে আবর্জনা জমা করা হয় এবং তা থেকে জৈবসার প্রস্তুত করা হয়। গ্রামে প্রবেশ করলে মনে হবে যেন চিত্রশিল্পীর আঁকা কোনও ক্যানভাসে ঢুকে পড়েছেন। (photo credit: wikimedia commons)

​রিওয়াই

ডাউকি থেকে মাওলিননং যাওয়ার রাস্তাতেই আছে রাওয়াই গ্রাম। এখানকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হল গাছের শাখা মূল লতা দিয়ে তৈরি একটি সেতু। প্রায় তিনশো বছর আগে খাসী আদিবাসীরা এই সেতুটি তৈরি করেন। জঙ্গলের ভিতরের নদী পারাপারের জন্য এই সেতু ব্যবহার করা হয়। অতিবৃষ্টিতে সেতুটি কখনও কখনও নষ্ট হয়ে যায়। বৃষ্টি কমলে স্থানীয়রা সেই সেতু ফের তৈরি করে ফেলেন।

​কীভাবে ডাউকি পৌঁছাবেন

রাজধানী শিলং-এর উমরোই বিমানবন্দর থেকে ডাউকির দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার। অনেকে গুয়াহাটি বিমান বন্দর থেকেও ডাউকির দিকে রওনা দেন। বিমান বন্দর থেকে ট্যাক্সি, বাস ইত্যাদি মেলে। অসমের গুয়াহাটি স্টেশনে নেমেও সেখান থেকে ট্যাক্সি বা বাসে চড়ে ডাউকি যাওয়া যায়। গুয়াহাটি থেকে শিলং পৌঁছানো যায় হেলিকপ্টারে। সেখান থেকে গাড়িতে ডাউকি। (Representative photo credit: wikimedia commons)

Eisamay News App: আশপাশের তাজা ও গুরুত্বপূর্ণ খবর বাংলায় পড়তে ডাউনলোড করুন এই সময় অ্যাপ



Source link