কেন এই স্বীপের এমন নামকরণ করা হল ?
মাজুলি কথাটির অর্থ হল ‘দুটি সমান্তরাল নদীর মধ্যবর্তী ভূমি’ এবং প্রকৃত পক্ষে এই দ্বীপটি ব্রহ্মপুত্র এবং এর শাখার সঙ্গম দ্বারা গঠিত হয়েছিল। যেহেতু শক্তিশালী ব্রহ্মপুত্র নদ ঘন ঘন তার দিক পরিবর্তন করে তাই মাজুলি দ্বীপটি ভবিষ্যতে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে। সুতরাং, প্রকৃতি তার ভূমিকা পালন করার আগে এবং এই দ্বীপটি অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার আগে, আপনার ব্যাগ ভরে নিন এবং এই চমত্কার অঞ্চল থেকে ঘুরে আসুন যান, যা কি না আসামের অনন্য সৌন্দর্যও বটে।
কী ভাবে পৌঁছবেন এই মাজুলি দ্বীপে ?

আপনি ফেরি করে মাজুলি দ্বীপে পৌঁছাতে পারেন। দুটি ফেরি আসামের জোরহাট থেকে সকাল ১০টা এবং বিকেল ৩টায় মাজুলির উদ্দেশ্যে সফর করে। গুয়াহাটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগত পর্যটকদের জোরহাট পৌঁছতে প্রায় সাত ঘণ্টা সময় লাগবে, যেখান থেকে তাঁরা মাজুলি দ্বীপে পৌঁছানোর জন্য ফেরি নিতে পারেন সহজেই। এই দ্বীপের নিকটতম শহর হল জোরহাট, যেখানে বাস, ট্রেন এবং এমনকি একটি বিমানবন্দরও রয়েছে।
মাজুলি দ্বীপে গিয়ে আপনি কোথায় থাকবেন ?

মাজুলিতে আপনার থাকার জন্য প্রি বুকিং -এর উপরেই ভরসা করা ভাল। এই অঞ্চলে হোম স্টে, বাঁশের কটেজ, রিসর্ট এবং বেশ কিছু সরকারি হোটেল পাওয়া যায়, যেগুলো আপনি নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন। এখানে যে হোটেলগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি অবশ্য তেমন অভিনব নয়। যদিও এই সমস্ত থাকার বিকল্প আপনাকে শুধুমাত্র মৌলিক সুবিধা প্রদান করবে। সেই খাঁটি এবং গ্রামীণ অনুভূতির উপভোগ করতে চাইলে অবশ্য আপনি বাঁশের কটেজ বুক করতে পারেন।
মাজুলি দ্বীপে গিয়ে কী দেখবেন আর কী করবেন ?

মাজুলি দ্বীপ দেখার সেরা সময় হয় অক্টোবর মাস থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে। এখানে বিদ্যমান প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক দৃশ্যের কারণে এই দ্বীপটি ১৬ শতক থেকে ‘অসমের সাংস্কৃতিক রাজধানী’ হিসাবে পরিচিত। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে রাস লীলা উৎসব পালিত হয় এখানে, যা তিন দিন ধরে চলে। আপনি সেই অনুযায়ী আপনার বেড়ানোর দিন ক্ষণ ঠিক করতে পারেন এবং এই উত্সবের অংশ হয়ে উঠতে পারেন।
এখানকার গেলে আর কী কী করতে পারবেন ?

এখানে স্থানীয় বাসিন্দারা আপনাকে খোলা মনে স্বাগত জানাবেন। আপনি তাঁদের সঙ্গে একটি দিন কাটাতে পারেন এবং স্থানীয় গ্রামীণ কার্যকলাপে নিযুক্ত হতে পারেন। হস্তনির্মিত পণ্য, যেমন মৃৎপাত্র, উপজাতীয় মুখোশ ইত্যাদি তৈরি করার কাজে অংশ নিতে পারেন এবং তার পর সেগুলিকে স্যুভেনির হিসাবে বাড়িতে নিয়েও যেতে পারেন।
মোদ্দা কথা হল, মাজুলি দ্বীপে প্রকৃতির বুঝে অখণ্ড অবসর কাটিয়ে আসতে পারেন কয়েক দিন।