ভারতের এই মন্দিরের প্রদীপটি অনবরত জ্বলছে সেই ১৪৬১ সাল থেকে, কারণ জানলে অবাক হয়ে যাবেন

Spread the love


অসমের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে ৩১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জোরহাট ছিল অষ্টাদশ শতাব্দীর টুংখুঙিয়া অহম রাজবংশের রাজধানী। বর্তমানে এটি অসমের সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র। আর ঢেকিয়াখোয়া বর নামঘর হল জোরহাটের ঢেকিয়াখোয়া গ্রামের একটি উপাসনালয়। ভাদ্র মাসের অখণ্ড নাম-কীর্তনের জন্য নামঘরে অগণিত ভক্তের ভিড় হয়।
জনশ্রুতি, ১৫২৮ সালে সাধক-সংস্কারক মাধবদেব এই নামঘর প্রতিষ্ঠা করেন। এই স্থানে সাধক মাধবদেব একটি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়েছিলেন। এবং সেই প্রদীপটি বিগত প্রায় ৪০০ বছর ধরে অবিরাম জ্বলছে। ভক্তরা প্রদীপটি নিভতে দেননি। সবসময় সর্ষের তেল দিয়ে তাঁরা ভর্তি করে রাখেন এই প্রদীপ। এশিয়া বুক অফ রেকর্ডস্ এবং ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এ “দীর্ঘতম সময়ের জন্য প্রজ্বলিত বাতি” বলে স্বীকৃতি পেয়েছে।প্রায় ১৩ বিঘা জমিতে বিস্তৃত এই নামঘর। এটি একটি বৈষ্ণব মন্দির।
নামঘরের মূল খুঁটিটি শাল কাঠের তৈরি। মন্দির তৈরির আগের দিন একদিন রাতে এক ভক্ত স্বপ্নে দেখেন যে, বর নামঘরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীটি ঢেকিয়াখোয়া জান স্রোতের বিপরীতে বয়ে গেছে। এবং সেই বিপরীত স্রোতে ভেসে আসছে বর নামঘর নির্মাণের শাল কাঠ। এর পরেই মন্দিরের খুঁটি শাল কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়। (All photo credit: wikimedia commons)

বিশালাকার ক্যাম্পাসের কারণে এই নাম রাখা হয়েছে

অসমের জোরহাটের ঢেখিয়াখোয়া বোরনামঘর (বোর মানে বড়) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সাধক-সংস্কারক মাধবদেব। বোরনামঘরের বোর শব্দটির অসমিয়া ভাষায় অর্থ হল বড়। এর বিশাল ক্যাম্পাসের কারণে এই নামকরণ করা হয়েছে। ১৩ বিঘায় এই উপাসনালয়টি নির্মিত হয়েছে।

মাধবদেব এক বৃদ্ধার কুঁড়েঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন

মাধবদেব এক বৃদ্ধার কুঁড়েঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন

নামঘর সম্পর্কে কথিত আছে, মাধবদেব দীর্ঘ যাত্রায় জোরহাটের এই ছোট্টো গ্রামটিতে অবস্থান করেছিলেন। দৈবক্রমে তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন এক বৃদ্ধার কুঁড়েঘরে। তিনি মাধবদেবকে থাকার জায়গা দিয়েছিলেন। এবং খেতে দিয়েছিলেন ভাত এবং ঢেঁকি শাক খেতে দিয়েছিলেন।

১৪৬১ সালে প্রদীপ জ্বালানোর পরামর্শ

১৪৬১ সালে প্রদীপ জ্বালানোর পরামর্শ

তাঁর প্রতি এমন শ্রদ্ধা দেখে মাধবদেব অত্যন্ত মুগ্ধ হন। এবং সেই স্থানেই একটি নামঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। অবশেষে স্থানটি দেহকিয়াখোয়া নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৪৬১ খ্রিস্টাব্দে নামঘরে একটি মাটির প্রদীপ জ্বালানোর দায়িত্বও তিনি বৃদ্ধাকে দিয়েছিলেন।

মাটির প্রদীপ নিভানো উচিত নয়

মাটির প্রদীপ নিভানো উচিত নয়

নামঘরের ব্যবস্থাপনা কমিটির মতে, ১৪৬১ সাল থেকে মাটির প্রদীপ জ্বলছে। আগুন যাতে কখনওই নিভে না যায় সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখা হয়। এটি এমন একটি জায়গা যার দর্শন একবার অন্তত করা উচিত।



Source link