শান্তিনিকেতন
বসন্তোৎসবের কথা উঠলে প্রথমেই নাম আসবে শান্তিনিকেতনের। কবিগুরুর হাত ধরে বোলপুরে চালু হওয়া ঐতিহ্য আজও পালন করা হয় নিয়ম মেনেই। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বসন্তোৎসবের দিন শান্তিনিকেতনকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে ফেলেন। সঙ্গ দেন স্থানীয়রাও। সারাদিন ধরে চলে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আবির খেলা, গল্প-আড্ডা আরও কত কী। বিশ্বভারতীয় সংলগ্ন এলাকা ছাড়াও শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন জায়গায় আবির খেলা হয়। কোপাই নদীর ধার, সোনাঝুরির জঙ্গলেও রঙের খেলায় মেলে ওঠেন পর্যটকরা। যদিও এই সময় শান্তিনিকেতনের হোটেলের ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে যায়। জিনিসপত্রের দামও বেশ বেড়ে যায়। তবে দুটো দিন একটু বেশি খরচ হলেই বা ক্ষতি কী, আনন্দের যে কোনও মূল্য হয় না। (Photo credit: pexels.com)
পুরুলিয়া

লাল পাহাড়ির দেশ পুরুলিয়ার দোলযাত্রা আবার সারা দেশের থেকে একদম আলাদা। ব্যতিক্রমী এই বসন্ত উৎসব চলে তিন দিন ধরে। পরব শুরু হয় দোলের ঠিক আগের দিন থেকে। চলে হোলি পর্যন্ত। এলাকাবাসী সারা বছর এই দিনগুলির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। এই তিনদিন ধরে রঙের খেলা ছাড়াও লোকশিল্প প্রদর্শনী, নাচ-গান সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আদিবাসীদের নানা আচার আচরণ বিশেষ করে ছৌ, ঝুমুর, দরবারির সাক্ষী হতে চাইলে এবারের দোলটা কাটাতে পারেন পুরুলিয়ায়। পলাশ বনের ভিতর, কিংবা অযোধ্যা পাহাড়ের কোলে রং খেলার অনুভূতিই কিন্তু আলাদা। রং ধুতে পারেন ঝরনার জলে। শহরে বসে এমন অভিজ্ঞতা কখনও পাবেন না। (photo credit: wikimedia commons)
মায়াপুর

মায়াপুরের রঙের দোল আবার আন্তর্জাতিক। সারা বিশ্ব থেকে বহু পর্যটক দোল পূর্ণিমার দিন এখানে হাজির হন। প্রধানত ইসকনের উদ্যোগে আয়োজিত রঙের পরবের কোনও তুলনাই হয় না। দেব-দ্বিজে ভক্তি থাকলে তো কথাই নেই, আর না থাকলেও সমস্যা নেই। মায়াপুরের রঙের মায়া কাটানো অসম্ভব। দুই তিনটে দিন সেখানে থেকে আসুন। সন্ধ্যার সময় ইসকনের মন্দিরে আরতি দেখে সময় কাটান। আনন্দ এবং প্রশান্তি উভয়েই মনকে ঘিরে ধরবে। (photo credit: wikimedia commons)
ঝাড়গ্রাম

পলাশ বনে রং খেলা তো সবাই করে। শাল বনে কোনোদিন রং খেলে দেখেছেন? না খেললে এবার খেলতে পারেন। সোজা চলে যান ঝাড়গ্রামে। সেখানে শাল গাছের জঙ্গল ভর্তি। পর্যটকরা সেখানে মনের সুখে রং খেলেন। রাজবাড়ি, ঝরনা, জলাশয় ঘুরে বেড়াতে পারেন। ঘুরে আসে পারেন আদিবাসীদের পাড়া থেকে। আর রং খেলার পাশাপাশি চলতে পারে দেদার পেটপুজো। মোট কথা পর্যটকদের মনোরঞ্জনের যাবতীয় ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। (Photo credit: pexels.com)
মহিষাদল রাজবাড়ি

দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রতিবারই সেজে ওঠে পূর্ব মেদিনপুরের মহিষাদল রাজবাড়ি। প্রতিবছর রাজবাড়ির নিজস্ব দোল উৎসব যেমন হয়, তেমনই সারা রাজ্য থেকে পর্যটকরা আসেন এই উৎসবে যোগ দিতে। রাজ্যের নানা জায়গা থেকে শিল্পীরাও আসেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। দিনে দিনে উৎসবের জনপ্রিয়তা এবং লোক সমাগম বেড়েই চলেছে। মহিষাদল রাজবাড়িতে গেলে রাজবাড়ির মিউজিয়াম, নাটমন্দির, গোপালজিউ মন্দির, নাটশালের আশ্রম, গেঁয়োখালির ত্রিবেণী সঙ্গম ইত্যাদি দেখে আসতে ভুলবেন না যেন। (Photo credit: pexels.com)