কুলার, এসি কিনতে হবে না, বাঁচবে ইলেকট্রিক বিলও! এই গরমে ঘুরে আসুন কালিম্পং থেকে

Spread the love


কালিম্পং শহরটিকে প্রকৃতিদেবী সৃষ্টি করেছেন অসাধারণ রূপের ছটা দিয়ে। হিমালয়ের কোলে পরম যত্নে থাকা এই শৈল শহর আমাদের বাংলার গর্ব। আর এই গরমে এখানে বেড়াতে যাওয়া যেন এক সুন্দর, স্নিগ্ধ অনুভূতি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে সাবেক ঐতিহ্যের মিশেল এই স্থানকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। পাহাড়ের সবুজ বনাণী যেন মেঘের আড়ালে সারাদিন ধরে লুকোচুরি খেলে। উত্তরবঙ্গ বেড়াতে গিয়ে কালিম্পংকে মিস্ করলে কিন্তু দারুণ ঠকবেন।
দার্জিলিং থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত কালিম্পং, সমুদ্রতল থেকে ১২৫০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এখানকার মনোরম দৃশ্য, বৌদ্ধ মঠ, তিব্বতি হস্তশিল্পের সমাহার অবসরযাপনের জন্য আদর্শ। অতিতে অঞ্চলটি ভুটানি রাজাদের শাসনাধীন ছিল। দার্জিলিঙের ভিড় এড়িয়ে ছুটি কাটাতে চাইলে কালিম্পং যাওয়াই ভালো।
কালিম্পঙে গেলে যেগুলি একেবারেই মিস করবেন না- (photo credit: istock.com)

ডেলো পাহাড়

ডেলো পাহাড় হল কালিম্পং শহরের সর্বোচ্চ স্থান। কুয়াশা না থাকলে এখান থেকে হিমালয় পর্বতকে স্পষ্ট দেখা যায়। স্পষ্ট নজরে আসে গোটা কালিম্পং শহর, কালিম্পঙের ছোটো ছোটো গ্রাম, তিস্তা নদী আরও কত কী। এখানে সূর্যাস্ত বা সূর্যোদয় দেখলে সারা জীবন মনে রাখবেন। এলাকাটি অপূর্ব সুন্দর। অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের এই স্থানটি দারুণ লাগবে। প্রায় ১৭০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই পাহাড়ে প্যারাগ্লাইডিং, ট্রেকিং, হর্স রাইডিং-এর ব্যবস্থা রয়েছে। সমযটা ভালোই কাটবে। (photo credit: istock.com)

ক্যাকটাস নার্সারি

ক্যাকটাস নার্সারি

হরেক রকমের ক্যাকটাস দেখতে চাইলে কালিম্পঙের পাইন ভিউ নার্সারি দেখতে ভুলবেন না। মর্গ্যান হাউসের ঠিক পাশেই রয়েছে এই নার্সারি। এই ক্যাকটাস নার্সারিটি কালিম্পংয়ের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ফুলের নার্সারিগুলির মধ্যে একটি। চাইলে খুব কম দামে হরেক রকম এবং বিরল প্রজাতির ক্যাকটাস এখানে পেয়ে যাবেন। এই নার্সারিতে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। পাইন ভিউ নার্সারি ছাড়াও অর্কিডের নার্সারি নার্সারি ম্যানস্ হেভেন এবং শান্তি কুঞ্জ নার্সারি ঘুরে দেখা যায়। (photo credit: wikimedia commons)

দুরপিন দারা পাহাড়

দুরপিন দারা পাহাড়

এই অঞ্চলের দ্বিতীয় উচ্চতম পাহাড় দুরপিন দারা। দক্ষিণ কালিম্পঙের এই জায়গাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আর এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখলে কিছুক্ষণের জন্য সবকিছু ভুলে যাবেন। রঙ্গিত আর তিস্তা নদী এখানকার সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এখান থেকে সিকিম, নাথুলা, টাইগার হিল, কার্শিয়ং, শিলিগুড়ি সবই বেশ কাছে। এই পাহাড়েই রয়েছে ডঃ গ্রাহামের বাড়ি। এটি কালিম্পং-এর অন্যতম প্রধান শিক্ষাকেন্দ্র। ১৯০০ সালে এই কেন্দ্র পরতিষ্ঠা করেন ইংল্যান্ডের স্যার অ্যান্ডারসন গ্রাহাম। পুরো কমপ্লেক্সটি ৫৫০ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।(photo credit: wikimedia commons)

হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দির এবং গির্জা

হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দির এবং গির্জা

ধর্মস্থানেরও অভাবে নেই কালিম্পঙে। থারপা কলিং মনাস্ট্রি, থংসা গুম্ফা, জং ডং পালরি ফো ব্রং মনাস্ট্রি এখানকার বিখ্যাত বৌদ্ধ মন্দির। হিন্দু মন্দিরের মধ্যে প্রসিদ্ধ মঙ্গল ধান মন্দির, হনুমান মন্দির, দুর্গি মন্দির, কালী মন্দির। ম্যাকফ্রালেন মেমোরিয়াল চার্চটিও পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। (photo credit: istock.com)

মর্গ্যান হাউস

মর্গ্যান হাউস

কালিম্পঙের আরেকটি জনপ্রিয় এবং আকর্ষণীয় স্থান হল মর্গ্যান হাউস। শুধু সৌন্দর্য্য নয়, মর্গ্যান হাউজের প্রধান আকর্ষণ হল এর কিংবদন্তি ঘটনা এবং ভৌতিক পরিবেশ। বাংলা তথা আমাদের দেশের অন্যতম ভৌতিক স্থান এটি। ১৯৩০ সালে এই বাংলোটি তৈরি করেছিলেন পাট ব্যবসায়ী জর্জ মর্গ্যান। সেই বাংলো বর্তমানে এটি গেস্ট হাউস। বাংলোর স্থাপত্য অপূর্ব সুন্দর। এখানকার আতিথেয়তাও অসাধারণ। দিনের বেলা এখানে সবকিছু স্বাভাবিক। কিন্তু রাতের বেলা নাকি এখানকার পরিবেশ অতিলৌকিক হয়ে ওঠে। অনেকেই নাকি এখানে অশরীরীদের অস্থিত্ব অনুভব করেছেন। (photo credit: wikimedia commons)

নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যান

নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যান

নেওড়া উপত্যকা জাতীয় উদ্যান কালিম্পঙের অন্যতম আকর্ষণ। অরণ্যের একপাশে রয়েছে বিশ্বের সুন্দরতম শৈলশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্গা। নেওড়া ভ্যালিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খয়ের, শিশু, শিরীষ প্রভৃতি বৃক্ষ। গাছগাছালির ভিড়ের মধ্যে চোখে পড়ে বাঘ, চিতাবাঘ, বনবিড়াল, কালো ভাল্লুক, কাঠবিড়ালি, লাল পাণ্ডা, দেশি বনরুই, সম্বর হরিণ, গোরাল, বন ছাগল বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আরও কত কী।(photo credit: istock.com)



Source link