কলকাতার কিছু মন্দিরে জিভে জল আনা এই খাবারগুলি প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয়

Spread the love


আশ্বিনের শারদ প্রাতে বেজে উঠেছে মঞ্জির৷ গ্রামে গ্রামে কাশের ছড়াছড়ি৷ আর শহরে ছড়াছড়ি বাঁশের৷ দুগ্গাপুজো বলে কথা৷ সেই রামের আমল থেকে চলে আসছে৷ কিন্তু জানেন কি যে, বাঙালির দুর্গাপুজো আশ্বিন মাসে হত না৷ হত চৈত্র মাসে৷ ভগবান রামচন্দ্র রাবণ বধের অভিপ্রায়ে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন আশ্বিন মাসে৷ চৈত্র মাসের নিয়ম ভেঙে আশ্বিনের এই পুজোকে তাই বলা হয় অকালবোধন৷ পুরাণ অনুযায়ী, চৈত্র মাসে মা দুর্গার আরাধনা প্রথম করেছিলেন রাজা সুরথ৷ সমাধি নামের এক বণিকের সঙ্গে ঋষি মেধার আশ্রমে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। যা পরে বাসন্তী পুজো নামে প্রসিদ্ধ হয়। আর এটাই বাঙালির প্রাচীন দুর্গাপুজো৷ যদিও বর্তমানে বাংলার খুব কম বাড়িতেই এই পুজো হয়ে থাকে।

সনাতন ধর্ম অনুসারে বছরে চারবার নবরাত্রি পালিত হয়। তার মধ্যে একটি হল চৈত্র নবরাত্রি। এই সময় নয় রাত ধরে দেবী দুর্গার নয় রূপের আরাধনা করা হয়। নবরাত্রির সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত বাঙালিরা পালন করে থাকেন বাসন্তী পুজো। এ বছর চৈত্র নবরাত্রি শুরু ২২ মার্চ৷ চলবে ৩০ মার্চ পর্যন্ত৷ সেদিন রাম নবমী। বাসন্তী পুজো চলবে ২৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। আর এই বাসন্তী পুজোই হল বাঙালির আদি দুর্গাপুজো৷ এই সময় দেশজুড়ে নানা রীতি নীতি মেনে দেবী মহামায়ার পুজো হয়৷ নির্মল এবং পবিত্র শরীর ও মনে দেবীর আরাধনা, উপবাস, সাত্ত্বিক আহার করেন ভক্তরা৷ যদিও বাঙালিদের মধ্যে সাত্ত্বিক আহারের পরিবর্তে নিরামিষ আহারের প্রচলন রয়েছে৷ সেই খাবার উৎসর্গ করা হয় দেবী দুর্গাকেও৷ আশ্বিন মাসের অকালবোধনে মা দুর্গার আরাধনা যেমন হয় সর্বজনীনভাবে, তেমনই চৈত্র মাসের বাসন্তী পুজো হয় সাধারণত কিছু বনেদী বাড়ি এবং মন্দিরে৷ আর পুজোতে মন্দিরগুলিতে মেলে দারুণ সুস্বাদু সব প্রসাদ৷ (photo credit: pexels.com)

​খিচুড়ি

ভোগের খিচুড়ি পরিবেশন ছাড়া বাসন্তী পুজো সম্পূর্ণ হয় না। আতপ কিংবা গোবিন্দ ভোগ চাল, মুগ ডাল, পাঁচ ফোঁড়ন ও ঘি সহযোগে তৈরি হয় খিচুড়ি৷ পেঁয়াজ রসুনের ব্যবহার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ৷ তবে খিচুড়িতে আদা দেওয়া যায়৷ মন্দিরে তৈরি এই খিচুড়ির স্বাদের কোনও তুলনা হয় না৷ এক গ্রাস গরম খিচুড়ি মুখে দিলে মনে হয় যেন স্বর্গে বসে অমৃত পান করছেন৷ এই অনন্য স্বাদের আকর্ষণ বুঝি মা অন্নপূর্ণাও এড়িয়ে যেতে পারেন না৷ তাই তাঁর পুজোয় ভোগের খিচুড়ি মাস্ট৷ (photo credit: wikimedia commons.com)

লুচি-তরকারি

লুচি-তরকারি

দেবীতে লুচি ভোগ দেওয়ার চলও রয়েছে৷ সঙ্গে বিশুদ্ধ নিরামিষ আলুর তরকারি, ছোলার ডাল, সুজি ইত্যাদি দেওয়া হয়৷ ছোটোদের কাছে এই প্রসাদ অত্যন্ত জনপ্রিয়৷ সাধারণত অষ্টমীর দিন লুচি ভোগ দেওয়ার রীতি৷ বলাবাহুল্য এই দিন প্রসাদ খাওয়ার হুজুগ আরও বেড়ে যায়৷ (photo credit: pexels.com)

লাবড়া

লাবড়া

বাঙালির মতো সুস্বাদু লাবড়া মনে হয় আর কেউ করতে পারেন না৷ আলু, কুমড়ো, বেগুন, ফুলকপি বা বাঁধাকপি, থোর, পটল সহ নানা দেশি সবজি দিয়ে তৈরি করা হয় এই অপূর্ব সুন্দর তরকারি বা লাবড়া। এটি সাধারণত খিচুড়ির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। যদিও খাঁটি লাবড়ার তরকারিতে গাজর বা টমেটো যোগ করার নিয়ম নেই৷ ভোগের লাবড়ায় শুকনো তেদপাতা, লঙ্কা এবং ভাজা জিরার গুঁড়ো দেওয়া হয়। খিচুড়ির সঙ্গে লাবড়া খেতে ভগবান এবং ভক্ত উভয়েই দারুণ পছন্দ৷ (photo credit: pexels.com)

​চাটনি

​চাটনি

চাটনি ছাড়া বাঙালির পুজো আরাধনা একরকম ভাবাই যায় না। আর তার মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে টমেটোর চাটনি। এছাডা়ও খেজুর আমসত্ত্ব, পেঁপে, জলপাই কিংবা আমের চাটনিরও প্রচলন রয়েছে। ভোগের খিচুড়ির সঙ্গে এর জুটির কোনও তুলনা হয় না। (photo credit: wikimedia commons.com)

​বেগুনী-সহ অন্যান্য ভাজা​

​বেগুনী-সহ অন্যান্য ভাজা​

খিচুড়ির সঙ্গে লাবড়া ছাড়াও বেগুনী পরিবেশেনর নিয়ম রয়েছে। অনেকে বেগুনীর পরিবর্তে বেগুন ভাজাও দিয়ে থাকেন। সঙ্গে থাকে আলু, কুমড়ো, ঢ্যাঁড়শ, পটল ভাজাও দেওয়া হয়। (photo credit: wikimedia commons.com)



Source link