আমাদের রাজ্যের এই জায়গায় বেড়াতে গেলে আপনার মন অনন্দে ভরে উঠবেই!

Spread the love


বেড়াতে গেলে সব সময়েই এই কথা মাথায় আসে যে, কোথায় বেড়াতে যাওয়া হচ্ছে। কংক্রিটের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আমরা সকলেই চাই এমন কোনও জায়গায় বেড়াতে, যেখানে প্রকৃতির কাছাকাছি পৌঁছনো যাবে, যেখানে আপনা হতেই শান্তি নেমে আসবে মনে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমাদের পক্ষে হাজারো কাজের মাঝে সব সময়ে সম্ভব হয় না ছুটি নেওয়া। কিন্তু যদি এক বেলাও সময় করে উঠতে পারেন, তা হলে অবশ্যই এক ফাঁকে ঘুরে আসুন বেলুড় মঠ থেকে। এই মঠ আপনাকে প্রদান করবে অখণ্ড শান্তি আর এক রাশ ভাল লাগার পরিবেশ। বেলুড় মঠ হল পশ্চিমবঙ্গের বেলুড়ে অবস্থিত একটি মঠ এবং ১৮৯৯ সালে স্বামী বিবেকানন্দ এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এটি রামকৃষ্ণ মঠ এবং রামকৃষ্ণ মিশনের সদর দফতর। বেলুড় মঠ ভারতের সমৃদ্ধ আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক এবং এই মঠের সেবা, সহানুভূতি ও একতার শিক্ষা সারা বিশ্বের মানুষকে অনুপ্রাণিত করে। তা হলে বরং বেলুড় মঠ ঘুরে আসার জন্য বেশ কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক এক ঝলকে। (All photo credit: wikimedia commons)

এই মঠের স্থাপত্য সৌন্দর্য চমকে দেওয়ার মতো

বেলুড় মঠ তার সুন্দর স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত। ভাল করে দেখলে এই স্থাপত্য হিন্দু, ইসলামিক এবং খ্রিস্টান স্থাপত্য শৈলীর উপাদানগুলির কথা মনে করিয়ে দেয়। মন্দিরের নকশাটি ঐতিহ্যবাহী এবং আধুনিক, জটিল খোদাই সহ এক অনন্য মিশ্রণ।

এই মঠের ঐতিহাসিক গুরুত্ব

এই মঠের ঐতিহাসিক গুরুত্ব

১৯৩৮ সালে ভারতীয় সাধক ও মহাপুরুষ শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের স্মরণের এবং তাঁর ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে এই বেলুড় মঠ তৈরি করা হয়েছিল। এই মঠ ও মঠের ভাবনাকে সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ শ্রদ্ধা করে। মঠটি রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান দফতর, যা শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং সামাজিক কল্যাণের ক্ষেত্রে নিরন্তর কাজ করে চলেছে।

এখানে ধর্মের অনন্য ধারণা প্রকাশিত হয়

এখানে ধর্মের অনন্য ধারণা প্রকাশিত হয়

বেলুড় মঠ ধর্মের ঐক্যের প্রতীক। শ্রী রামকৃষ্ণ, শ্রী সারদা দেবী, স্বামী বিবেকানন্দ পূজিত হন। তবে তার পাশাপাশিই এই মন্দিরে যিশু খ্রিস্ট, ভগবান বুদ্ধ এবং নবী মহম্মদ-সহ বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মীয় প্রচারকদের ছবি রয়েছে। এই মঠের মূল লক্ষ্য হল বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি ও সংহতির প্রচার করা এবং শিব জ্ঞানে জীব সেবা করা।

বেলুড় মঠে কী ভাবে যাবেন আপনি ?

বেলুড় মঠে কী ভাবে যাবেন আপনি ?

কেউ যদি কলকাতা শহরের অনেকটাই দূর থেকে শুধু মাত্র এই বেলুড় মঠ দেখতে আসেন, তাঁদের জন্য জানিয়ে রাখা জরুরি যে, এই মঠের নিকটতম বিমানবন্দর হল কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যা বেলুড় মঠ থেকে প্রায় ১৬ কিলো মিটার দূরে অবস্থিত। হাওড়া স্টেশন হল নিকটতম প্রধান রেলওয়ে স্টেশন এবং সেই স্টেশন বেলুড় মঠ থেকে প্রায় ৬ কিলো মিটার দূরে অবস্থিত। বেলুড় মঠে যাওয়ার জন্য কলকাতার যে কোনও প্রান্ত থেকে বাসেও যাওয়া যায় সহজে।

বেলুড় মঠ কখন যাবেন ?

বেলুড় মঠ কখন যাবেন ?

বেলুড় মঠে যাওয়ার সর্বোত্তম সময় হল শীতের মাসগুলিতে (অক্টোবর মাস থেকে ফেব্রুয়ারি মাস), যখন আবহাওয়া মনোরম এবং শুষ্ক থাকে। এই মঠের অনেকটা জুড়ে খোলা জায়গা। ফলে পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখতে গেলে এই শীতের সময় ভারী ভাল লাগে। তবে সারা বছরই মানুষ এখানে আসে। গ্রীষ্মের মাসগুলিতে (মার্চ মাস থেকে মে মাস) পরিদর্শন করলেও মঠ ও মঠ সংলগ্ন চত্বরে বেশ গরম পাওয়া যায়, সে কথা অবশ্যই মাথায় রাখুন। আর চাইলে ঘোর বর্ষা কাল (জুন মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস) এড়িয়ে চলুন। কারণ তা হলে বৃষ্টির মাঝে বেলুড় মঠের চত্বরের খোলা জায়গা ঘুরতে পারবেন না আপনি।

এই বেলুড় মঠ সব মানুষদের জন্য দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে ঘুরতে গেলে শুধু মন আর মস্তিষ্ক ভরে প্রশান্তিই পাবেন।



Source link