হিন্দি সিনেমার ভূতেরা পাহাড়েই বেশি ঘোরা ফেরা করে। আলো ঝলমলে শহর তাদের না পসন্দ। কিন্তু হিমালয়ের শৈল শহরগুলির অশরীরীরা হিন্দি ছবি দেখে না। তারা সেই প্রাচীন যুগ থেকেই এই পাহাড়ে নাকি বসবাস করছে। শুধু ভূতেরা কেন পাহাড়ি শহর পর্যটকদের কাছেো দারুণ আকর্ষণীয়। গ্রীষ্ম হোক বা শীত, পাহাড়ি জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার মজাই আলাদা। সেখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য, পাখির কোলাহল, নদীর শব্দ, আশপাশের দোকান থেকে চা আর ম্যাগির সুবাস এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা দেয়। তা আগামী শীতে পাহাড়ি আবহাওয়ায় ভূতের সঙ্গে দেখা করতে চান? তাহলে ঘুরে আসতে পারেন কার্শিয়ঙের ডো হিল থেকে। লোকে বলে, আমাদের দেশের সবচেয়ে ভৌতিক শৈল শহর নাকি এটিই। বুকের পাটা না থাকলে সেখানে না যাওয়াই ভালো। (All photo credit: istock.com)
রহস্যময় ডো হিল
কার্শিয়ঙের ডো হিল, ভারতের সবচেয়ে ভুতুড়ে হিল স্টেশন। দার্জিলিং থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই স্থানকে কেন্দ্র করে অলৌকিক ঘটনা এবং গল্পের কোনও অভাব নেই। ডো হিলকে ঘিরে রয়েছে অপরিসীম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বন্য প্রাণীরা। দিন হোক বা রাত, অলৌকিক কার্যকলাপ নাকি এখানে থামে না। এই জায়গাটি দেখতে যতটা মনকে মুগ্ধ করে, এখানকার ভুতুড়ে গল্পগুলো ততটাই শরীরে শিহরণ জাগায়।
মুণ্ডহীন কিশোরের গল্প

এক অজ্ঞাত কিশোরের শিরচ্ছেদের গল্প ডো হিলের আকাশে বাতাসে ঘুরে বেড়ায়। স্থানীয় লোকজন তো বটেই, এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকরাও কিশোরের শিরচ্ছেদের গল্পে আতঙ্কিত। ডো হিল থেকে ফরেস্ট অফিস যাওয়ার রাস্তায় নাটি এক কিশোরের শিরশ্ছেদ হতে দেখেছেন অনেকে। লোকে বলে মুণ্ডহীন কিশোরের মতো দেখতে কোনও অশরীরী এই স্থানে ঘুরে বেড়ায় আবার রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে সে আচমকা কুয়াশার মধ্যে মিলিয়ে যায়।
ভৌতিক অরণ্য

ডো হিলের জঙ্গল নাকি রহস্যে ঘেরা। অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী এবং স্থানীয়রা বহুবার ডো পাহাড়ের জঙ্গলে গিয়ে সেখানকার রহস্য সমাধানের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তার ফলাফল সবসময়ই ভয়াবহ হয়েছে। স্থানীয়দের কথায়, জঙ্গলের দিকে গেলেই আপনার মনে হবে কেউ আপনাকে দেখছে। কেউ কেউ এমনও বলেছেন যে, একবার আপনার মনে হবে লাল চোখওয়ালা কেউ আপনাকে দেখছে এবং হঠাৎ ঘন বনের মধ্যে কোথাও লুকিয়ে পড়ছে। শুধু তাই নয়, এক নারীর বিদেহী আত্মাকেও নাকি বনে বেড়াতে দেখা যায়।
ডো হিলের ভুতুড়ে স্কুল

যদিও ডো হিলের জনসংখ্যা কম, তবুও এখানে একটি শতাব্দী প্রাচীন স্কুল রয়েছে। ভিক্টোরিয়া বয়েজ হাই স্কুল। পাহাড়ের অন্যান্য জায়গার মতো এই স্কুলও নাকি ভূতের আস্তানা। কার্শিয়ঙের ভিক্টোরিয়া বয়েজ হাই স্কুল এবং ডোহিল গার্লস্ হাইস্কুলে নাকি অশরীরীরা বহাল তবিয়তে বাস করে। অশরীরী হলেও তাদের পায়ের শব্দ নাকি রাতের বেলা স্পষ্ট শোনা যায়। কাহিনি অনুসারে, অতিতে এই স্থানে বহু মৃত্যু হয়েছে। যার সঠিক রহস্য এখনও জানা যায়নি। শীতের সময়, রাতের দিকে স্কুলের প্রাঙ্গণে নাকি শিশুদের দৌড়াদৌড়িরশব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা। অথচ শীতকালে এই স্কুল চার মাস বন্ধ থাকে।
কীভাবে যাবেন ডো হিলে

কলকাতা থেকে বিমানে চড়ে নামতে হবে বাগডোগরা বিমান বন্দরে। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে ডো হিল পৌঁছোতে পারবেন। শিলিগুড়ি বা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকেও ডো হিল পৌঁছোনো যায়। গাড়ি ভাড়া, শেয়ারিং জিপ কিংবা বাসে চেপে কার্শিয়ং পৌঁছোনো যায়।